বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছিল টিম টাইগার্স। তবে সবকিছুকে পিছনে ফেলে গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচ জিতে সুপার এইট নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। এরপরই বাংলাদেশের সমর্থকরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল সেমিফাইনাল খেলার।
তবে সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়ার পর, ভারত পরীক্ষাতেও পাশ করতে পারেনি টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের কাছে ৫০ রানে হেরে সেমিফাইনালের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বাংলাদেশের।
আগে ব্যাট করে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সে ১৯৬ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে রোহিত শর্মার দল। রানপাহাড় তাড়া করতে নেমে ব্যাট হাতে লাল-সবুজের দল ছিল ম্লান। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে টাইগাররা, আগ্রাসী ব্যাটিংও করতে পারেননি কেউ। ব্যাট হাতে বলার মত স্কোর করতে পেরেছেন কেবল অধিনায়ক শান্ত, তার ৪০ রানের ইনিংসের সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ফলে ৫০ রানের বড় জয় পেয়েছে ভারত।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ছিল ভারত। তবে বেশি আক্রমণাত্মক হওয়া রোহিত শর্মাকে বাংলাদেশ ফিরিয়ে দিতে পারে দ্রুতই। ১১ বলে ২৩ রান করে সাকিব আল হাসানের বলে রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। প্রথম বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পঞ্চাশ উইকেট পূর্ণ হয় সাকিবের।
পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৫৩ রান করে ভারত। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে দুই উইকেট তুলে নেন তানজিম হাসান সাকিব। উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে বোল্ড আউট হন বিরাট কোহলি। ২৮ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৭ রান করেন তিনি।
এক বল পরই সূর্যকুমার যাদবকে আউট করেন তানজিম। আগের বলে ছক্কা হাঁকানো ব্যাটার এবার ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। উইকেটে এসে শুরুর দিকে থিতু হলেও পরে বাউন্ডারি হাঁকাতে শুরু করেন ঋষভ পান্ত। তাকে ফেরান রিশাদ হোসেন।
টানা দুই বলে ছক্কা ও চার হাঁকানোর পরের বলে রিভার্স সুইপ করতে যান পান্ত। কিন্তু ক্যাচ যায় শর্ট থার্ড ম্যানে দাঁড়িয়ে থাকা তানজিমের কাছে। ২৪ বলে ৩৬ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। পান্তের বিদায়ের পর আক্রমণের দায়িত্ব কাঁধে নেন শিভাম দুবে।
তাকেও ফেরান রিশাদ। এবারও আগের বলে ছক্কা খাওয়ার পরের বলে ঝুলিয়ে দেন তিনি, তুলে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান শিভাম দুবে। ২৪ বলে ৩ ছক্কা ৩৪ রান করেন তিনি।
ভারতের হয়ে শেষটা দারুণ করেন হার্দিক পান্ডিয়া। মোস্তাফিজুর রহমানের শেষ ওভারে ১৮ রান নেন তিনি। স্রেফ ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন পান্ডিয়া। তানজিম হাসান ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন, দুই উইকেট পাওয়া রিশাদ ৩৩ রান দেন।
এক বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট এখন তানজিমের, এবার নিয়েছেন ১১ উইকেট। এবার তার সমান উইকেট রিশাদেরও। ২০২১ সালে সাকিব আল হাসান ১০ উইকেট পেয়েছিলেন, সেটি এতদিন ছিল সর্বোচ্চ।
১৯৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় ৩৫ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৩ রান করে লিটন দাস আউট হন হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে। এরপর ৯৩ স্ট্রাইকরেটে ২৯ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন আরেক ওপেনার তানজিদ তামিম।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আজ দলের হাল ধরতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়ও। কুলদীপ যাদবের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাদে পড়ে আউট হন তিনি। একে একে ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব আল হাসান এবং জাকের আলি অনিকও।
সাকিব ১১ রান করলেও জাকের আউট হয়েছেন ১ রান করে। টাইগারদের হয়ে ব্যাট হাতে আজ বলার মত পারফর্ম করতে পেরেছেন অধিনায়ক শান্ত, ৩ ছয় আর ১ চারে তিনি ৩২ বলে করেছেন ৪০ রান। আর শেষদিকে রিশাদ হোসেন করেছেন ১০ বলে ৩ ছয় আর ১ চারে ২৪ রান। মাহমুদউল্লাহ ১৩ রান করে শেষ ওভারে আউট হলে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান করতে পারে বাংলাদেশ, ফলে ৫০ রানের দারুণ এক জয় পায় ভারত।